বিয়েতে মা বাবার মতামত - সেরা ৫ টি সুবিধা

ভুমিকাঃ

মা বাবার অমতে বিয়ে করাটা খুব একটা সুখকর জিনিস নয়।হয়ত মনে করছেন, আপনি সামান্য সুখের আশায় অথবা বর্তমান মোহের আশায় মা-বাবার অমতে বিয়ে করে বর্তমানে সুখী থাকতে পারবেন। কিন্তু সেই সুখ চিরস্থায়ী নয়। ওইদিকে মা বাবা ও আপনাকে মতামত না দেওয়ার কারণে তারাও বিষণ্ণতায় ভুগবে। প্রত্যেক সন্তানের উচিত বিয়ের ক্ষেত্রে মা-বাবার মতামত নেওয়া। এতে সবাই মিলে সুখে থাকা যায়।

বিয়েতে মা বাবার মতের গ্রহণযোগ্যতা

বিয়ে মানে সামাজিক স্বীকৃতি, বিয়ের মাধ্যমে শুধু মাত্র একটি নতুন পরিবারই গঠন হয় না আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয় দুটি পরিবারের ভেতরেও । তাই বিয়ের ক্ষেত্রে দুই পরিবারের মা বাবার মতামত থাকা জরুরী। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিয়ের পাত্র পাত্রী পছন্দের ক্ষেত্রে ছেলেমেয়ের থাকে নিজস্ব পছন্দ ।হয়ত ছেলে বা মেয়ে তার পরিমণ্ডল থেকে কাউকে আগেই পছন্দ করে রেখেছে, ঘর বাধার স্বপ্ন দেখেছে তাকে নিয়েই।

অন্য দিকে পিতা মাতা সন্তানকে জন্মের পর থেকেই আগলে রেখেছে। নিজের মত করে বড় করে তুলেছে। তাই তারা চায় তাদের সন্তানের নতুন জীবনের জীবন সঙ্গী তারাই পছন্দ করে দিবে। পছন্দের এই জায়গায় পিতা মাতা এবং সন্তানের ভেতরে কখনো কখনো দ্বিমত তৈরী হয়। এ কথা সত্য জোর করে কোন সম্পর্ক কারো উপর যেমন চাপানো যায় না, ঠিক তেমনি একাকীও সুখী হওয়া সম্ভব না।তাই বিয়ের ব্যাপারে পিতামাতা ও সন্তান দুজনকেই ঐক্যে আসতে হবে।

যদি একটি মেয়ে একটি ছেলেকে পছন্দ করে।এবং ছেলেটি ভালো এবং শিক্ষিত পরিবারের হয় ,দুই পরিবারের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে তবে সেখানে পরিবারের মতামত নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ ।সব দিক বিবেচনায় ছেলেমেয়ের পছন্দ মানানসই হলে পিতামাতার সন্তানের পছন্দের মূল্য দেওয়া উচিৎ । তবে মেয়েটির বা ছেলেটির পছন্দ যদি হয় কিশোর বয়সের পাগলামি এবং যার কারণে তার ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে পারে  সে ক্ষেত্রে সন্তানের ভালোর জন্য বাবা মার সিধান্ত মেনে নেওয়া ভালো। কারন মা বাবা কখনোই সন্তানের খারাপ চান না। তাই সন্তানেরও মা বাবার মতামতের উপর ভরসা রাখা উচিত।

নিজের পছন্দ বনাম বাবা মায়ের ইচ্ছাঃ

 

কাউকে ভালোবাসার বা ভালোলাগার অনুভুতি অসাধারণ । তখন জীবন হয়ে ওঠে স্বপ্নের মত, কল্পানার সেই জগত হয় সব থেকে আপন।তখন ভালোবাসার মানুষকে ছেড়ে থাকার কথা কল্পনাতেও আনা যায় না। তবে এমন অনুভুতি যে মানুষটার জন্য সেই মানুষটা সব সময় আপনা জন্য সঠিক হবে এমন টা নয়। হতে পারে ভালোবাসার মোহে তার খারাপ দিক আপনার চোখে পড়ছে না। তাই বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পরিবারের পাশে থাকাটা বাঞ্ছনীয় ।

বিয়ের আগের স্বপ্ন দেখার দিন গুলি আর বিয়ের পরের সময় এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য অনেক। বিয়ের পর আসলে ভালো লাগার রঙিন চশমা খুলে যায় এবং বাস্তবের মানুষটিকে দেখা যায়। ছেলেটিকে ভালো করে চেনা যায়। সবসময় নিজের কথা গুরুত্ব না দিয়ে পরিবার এবং নির্ভরযোগ্য কোনো তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে যাচাই করা উচিত ছেলের ব্যাপারে। সব রকম খোঁজ খবর নেওয়া উচিত যে কাউকে ভালো লাগতেই পারে। তবে পছন্দের মানুষকে  বিয়ে করতে চাইলে  সেটা কতটা যুক্তিসঙ্গত সেটাও দেখা উচিত। 

নিজের পছন্দের পাশাপাশি মা-বাবার পছন্দকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মা বাবার অমতে বিয়ে করতে হলে নিজের  সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে হবে।আবার মা-বাবার সিদ্ধান্তটাও শোনা উচিত।কারণ মা বাবার দোয়া ছাড়া জীবনে সুখী  হওয়া যায়  না। কোন না কোন ভুল বোঝাবুঝি লেগেই থাকে।সমাজের ভাল মন্দ দিক বোঝার একটা বয়স আছে, শুধু তাই নয় বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী ছেলেদের বিয়ের বয়স ২১ এবং মেয়েদের ১৮। এর আগে যেমন বিয়ে হয় না তেমনি নিজের ভালো মন্দ ও এই বয়সে বোঝা যায় না। জীবন একটাই আর এই জীবন নষ্ট হওয়ার জন্য একটি ভুল সিধান্ত যথেষ্ট ।তাই  সারা  জীবনের সিধান্তে পরিবারেকে পাশে রাখতে হবে।

 

বাবা মা এর অমতে বিয়ের পরিনাম

 

বিয়ের ব্যাপারে মা বাবা অর্থাৎ পরিবারের অন্য সবার মতামত যে কতখানি গুরুত্ব পূর্ণ তা বোঝার জন্য ছোট একটি উদাহরণই যথেষ্ট ।ভালোবেসে বিয়ে করেছে আকাশ আর মেঘলা, পরিবারের অমতে বিয়ে তাই মেঘলার সাথে তার পরিবারের কোন সম্পর্ক নেই। এদিকে আকাশের পরিবার ও মন থেকে ওদের বিয়ে মেনে নেয় নি , আকাশের পরিবার তাই মেঘলা বা আকাশের ছোট বড় ভুল ত্রুটিও অনেক বড় করে দেখে, আর এই সব নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হয় । ফলে বাড়ে দূরত্ব । এক সময়ের ভালোবাসার মানুষের কাছে ভালোবাসা হয়ে পড়ে মূল্যহীন । নিজেদের এই সমস্যা ওরা কাউকে বলতে পারে না বা পাশে পায় না। কারন বিয়েটা ছিলো পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে । তবে ৫০-৬০ ভাগ ক্ষেত্রে পরিবারের অসম্মতির বিয়েটা নতুন অতিথির আগমনের সাথে সাথে বদলে যায়, তখন সম্পর্ক গুলো স্বাভাবিক হয়ে আসে।

SCAN TO VIEW

OUR OFFICES